ফের ত্রিপুরার কৈলাসশহরের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে তীব্র উত্তেজনা। অভিযোগ, বাংলাদেশি নাগরিকরা অবৈধভাবে জিরো পয়েন্টে এসে ভারতীয় নাগরিকদের বেধড়ক মারধর করেছে। শুধু মারধরই নয়, রীতিমতো ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দুই ভারতীয়কে রক্তাক্ত করেছে তারা। জখম দুজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
কৈলাস শহরের হীরাছড়া এলাকায় বাংলাদেশ সীমান্তে। ইরানী থানা এলাকার হীরাছড়া এডিসি গ্রাম এলাকায় বিএসএফের ১৯৯ নং ব্যাটেলিয়নের বর্ডার আউট পোস্ট রয়েছে। এর একদম কাছেই সীমান্তের ৪৪ নম্বর গেট রয়েছে। গেটের ওপারে জিরো পয়েন্টে ভারতীয় নাগরিকদের জায়গা রয়েছে। সেখানে তাঁরা ধান এবং পান চাষ করে। এই গ্রামের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৩৪ বছরের জমির আলি এবং ইরানি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ২৮ বছরের করিম আলিদের জিরো পয়েন্টে জায়গা রয়েছে। করিম ও জমির দুই ভাই। পেশায় কৃষক। তাঁরা প্রতিদিন সকালে বিএসএফের খাতায় স্বাক্ষর করে জিরো পয়েন্টে গিয়ে চাষবাদ করেন।
প্রতিদিনের মতো ২৬ জানুয়ারি রবিবার সকাল আটটায় জিরো পয়েন্টে যান। গিয়ে দেখেন, নিজেদের জায়গায় গিয়ে দেখে যে, পান গাছ থেকে কেউ বা কারা প্রচুর পান ছিঁড়ে নিয়ে গিয়েছে। প্রচুর ধান নষ্ট করে রেখেছে। তা দেখে করিম এবং জমির চিৎকার করে। পরে দুই ভাই বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে দশ-বারো জন বাংলাদেশি নাগরিক দা-লাঠি এবং লোহার রড নিয়ে তাদের উপর আক্রমণ চালায়। করিমের বাম হাতে এবং পিঠে আঘাত লাগে। জমিরের মাথায় এবং পিঠে আঘাত লাগে। তারপরই বাংলাদেশি নাগরিকরা চম্পট দেয়।
রক্তাক্ত দুই ভাই কোনওরকমে গেটের ভিতরে ঢুকে চিৎকার করলে তাঁদের আত্মীয়রা এসে দুই ভাইকে চিকিৎসার জন্য ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, করিমের বাঁহাতের একটি আঙুল কেটে ফেলতে হবে। দুজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
করিম আলী জানান যে, আক্রমণকারীরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। ঘটনাটি ঘটার সময় বিএসএফ জওয়ানরা ৪৪ ননম্বর গেটে পাহারা দিচ্ছিল। তবে, যে জায়গায় ঘটনাটি ঘটেছে সেই জায়গা থেকে গেট অনেকটাই দূরে। ইরানি থানার পুলিশ এসে দুই ভাইয়ের খোঁজখবর নিয়েছে এবং কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।